তুঘলক বংশ (১৩২০-১৪১৩ সাল)
মুহম্মদ বিন তুঘলক (১৩২৫-১৩৫১)
মুহম্মদ বিন তুঘলক অত্যন্ত প্রতিভাশালী শাসক ছিরেন।
দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তর: রাজ্য
শাসনের প্রত্যক্ষ অসুবিধা দূর করার জন্য ১৩২৬-২৭ খ্রিস্টাব্দে সাম্রাজ্যের কেন্দীয়
রাজধানী দিল্লী থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন। কিন্তু নানাকারণে কর্মচারীদের দেবগিরি
পছন্দ না হওয়ায় এবং উত্তর ভারতে মঙ্গলদের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি রাজধানী দিল্লীতে ফেরত আনেন।
প্রতীক মুদ্রার প্রচলন: সুলতান সোনা ও রুপার মুদ্রার পরিবর্তে প্রতীক তামার মুদ্রা প্রচলন করে মুদ্রামান
নির্ধারণ করে দেন্ প্রতীক মুদ্রা জাল না হওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন
তা সে যুগে ছিল না। ফলে ব্যাপকভাবে মুদ্রা জাল হতে থাকে । এজন্য সুলতানকে এ পরিকল্পনা
ত্যাগ করতে হয়।
ইবনে বতুতার আগমনঃ ১৩৩৩ খ্রিস্টব্দে মুহম্মদ
বিন তুঘলকের রাজত্বকালে ইবনে বতুতা ভারত বর্ষে আগমন করেন। সুলতানের সাথে পরিচয় ঘটলে
তিনি এই পরিব্রাজককে কাজীর পদেনিযুক্ত করেন। ইবনে বতুতা অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে ৮ বছরকাল
উক্ত পদে বহাল ছিলেন। অতঃপর সুলতানের বিরাগভাজন হয়ে কারারুদ্ধো হন। সুলতান এই বিদেশী
পর্যটকের প্রতি দয়া পরবশে হয়ে ক্ষমা প্রদর্শন করেন।
মাহমুদ শাহ
তুঘলক বংশের শেষ সুলতান ছিলেন মাহমুদ
শাহ। বিখ্যাত তুর্কি রীর তৈমুর ছিলেন মধ্য এশিয়ার সমরকন্দের অধিপতি। শৈশবে তার একটি
পা খোড়া হয়ে যায় বলে তিনি তৈমুর লঙ নামে অভিহিত্
মধ্য এশিয়ায় বিশাল সাম্রাজ্য স্থাপনের লক্ষে ১৩৯৮ সালে তৈমুর ভারত আক্রমণ করেন। তৈমুরকে বাধা দেওয়ার
ক্ষমতা মাহমুদ শাহের ছিলনা। তিনি বিনা বাধায় দিল্লীতে প্রবেশ করেন। প্রায় তিনমাস ধরে
অবাধ হত্যা ও লুণ্ঠনের পর তিনি বিপুল সম্পদ নিয়ে স্বদেশে ফিরে
যান্
খান জাহান আলী
খানজাহান আলী ছিলেন একজন মুসলিম ধর্মপ্রচারক
এবং বাংলাদেশের বাগেরহাটের একজন স্থানীয় শাসক। তিনি ১৩৬৯ খ্রিস্টাব্দে দিল্লীর এক সম্ভ্রান্ত
পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। খান জাহান আলী ১৩৮৯ সালে তুঘলক সেনাবাহিনীতে সেনাপতির পদে
যোগদান করেন। তিনি রাজা গণেশেকে পরাহিত করে বাংলার দুক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অঞ্চলে ইসলামের
পতাকা উড্ডীন করেন। তিনি বাগেরহাট জেলায় বিখ্যাত য়াটগম্বুজ মসজিদ নির্মাণ করেন। তিনি
পঞ্চদাশ শতা্ব্দীতে (১৪৩৫-১৪৫৯খ্রি:) এটি নির্মাণ করেন। মসজিদের নাম য়াট গম্বুজ হলেও মসজিদে গম্বুজ মোটেও ষাটটি নয়, গম্বুজ মোট ৮১ ট্ মসজিদের ভিতরে ষাটটি
স্তম্ভ বা পিলার আছে। মসজিদের চারকোণায় চারটি মিনার আছে। এটি বাংলাদেশের মধ্যযুগের
সবচেয়ে বড় মসজিদ। ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে।
লোদী বংশ (১৪৫১-১৫২৬খ্রি:)
১৫২৬ সালে পানিপথর প্রথম যুদ্ধে বাবুরের
নিকট দিল্লীর লোদী বংশের সর্বশেষ সুলতান ইব্রাহীম লোদীর পরাজয়ের মাধ্যমে দিল্লীর সালতানাতের
পতন ঘটে।
No comments:
Post a Comment