মুঘল শাসন (দ্বিতীয় পর্যায়)
সম্রাট জালাল উদ্দিন
আকবর (১৫৫৬-১৬০৫সাল)
১৫৫৬
সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর দিল্লীর সিংহাসনে আরোহন করেন। হুমায়ুনের মৃত্যুর পর বৈরাম
খান আকবরের রাজপ্রতিনিধি নিযুক্ত হন। এজন্য আকবর অনুরাগবশত তাকে Lord Father বা খান ই বাবা বলে ডাকতেন। হুমায়ুরেন মৃত্যুর
পর হিমু দিল্লীর মুঘল শাসনকর্তাকে পরাজিত করে দিল্লী ও আগ্রা অধিকার করেন এবং স্বাধীনভাবে
রাজত্ব শুরু করেন।
পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধঃ
প্রতিপক্ষঃ আকবরের
সেনাপতি বৈরাম খান এবং আফগান নেতা হিমু।
সময়কালঃ হিমু
পরাজিত ও নিহত
হন। এ যুদ্ধের ফলে আকবর দিল্লী অধিকার করেন্ এ যুদ্ধে জযলাভের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে
মুঘল-আফগান সংঘর্ষের অবসান গটে।আকবরের উদার নীতি: অমুসলমানদের উপর ধার্য সামরিক করকে
জিজিয়া কর রহিত করেন্ তিনি রাজপুত কন্যা যোধাবাঈকে বিবাহ করেন। তিনি রাজপুতদের বিভিন্ন
উচ্চপদে অধিষ্ঠিত করেন।আকবরের ধর্মমত: ১৫৮২ খ্যিস্টাব্দে সকল ধর্মের সার সম্বলিত
দীন-ই-ইলাহী নমক নদুন একেশ্বরবাদী ধর্মমত প্রবর্তন করেন্
আকবরের চরিত্র
ও কৃতিত্ব: সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে মুঘল সাম্রাজ্য
সর্বাধিক বিস্তার লাভ করে। আকবর ১৫৭৬ সালে বাংলা জয় করেন। রাজকর্মচারীদের সুবিন্যস্ত
করার জন্য তিনি মসসবদারী প্রথা চালু করেন। সম্রাটের রাজসভার সদস্যদের মধ্য আবুল ফজল, ফৈজী, টোডরমর, বীরবর, মানসিংহ প্রভৃতি
ব্যক্তিবর্গের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রাজস্ব মন্ত্রী টোডরমর রাজস্ব ক্ষেত্রে সংস্কারের
জন্য ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। আবুল ফজল রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ আইন-ই-আকবরি।আকবরের রাজসভার
গায়ক ছিরেন তানসেন। তানসেনকে বুলবুল-ই-হিন্দ বরা হয়। আকবরের রাজসভার বিখ্যাত
কৌতুককার ছিলেন রীরবল।
সেলিম নূর উদ্দিন মুহম্মদ জাহাঙ্গীর (১৬০৫-১৬২৭)
সম্রাট
জাহাঙ্গীরের সাথে নূরজাহানের বিবাহ মুঘর সম্রাজ্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
তিনি অপূর্ব রুপবতী ও
গুণবতী
গহিরা ছিরেন। নূরজাহানের বাল্য নাম ছিল মেহেরু ছো। সম্রাট আকবর বাংলা জয় করলেও সারা বাংলায় মুঘল শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত
হয়নি। সম্রাট জাহাঙ্গীর বাংলায় মুঘল শাসন সুপ্রতিষ্টিত করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনীমূলক
গ্রন্থ দুজুক-ই-জাহাঙ্গীর । তিনি এদেশের সরকারী কাজে ফারসি ভাষা চালু করেন।
শাহজাহান ওরফে খুররম(১৬২৮-১৬৫৮ সাল)
জাকজমক ও স্থাপত্য শিল্প: মমতাজ
মহল ছিলেন সম্র্র্র্রাট শাহজাহানের স্ত্রী। শাহজাহা তার স্ত্রীকে প্রাণাধিক ভালবাসতে।
সম্রাজ্ঞী ১৬৩১ সারে শেষ নিঃশেষ ত্যাগ করেন। সম্রাট তার প্রিয়তমার মৃত্যুতে গভীর আঘাত
পান। তিনি আগ্রাার যমুনা নদীর তীরে পণ্তীপ্রেমের অক্ষয়কীর্তি তাজমহল নির্মাণ করেন।
মণি মুক্তা খচিত স্বর্নমণ্ডিত ময়ুর সিংহাসন সম্রাট মাহজাহানের অমর সৃষ্টি । সম্রাটের
মাজাহানের মুকুটে বিশ্ববিশ্রুত অপূর্ব কোহিনুর হীরা শোভা বর্ধন করত্ সম্রাট শাহজাহান
দিল্লীতে লাল কেল্লা, জাম-ই-মসজিদ, দিওয়ান-ই-আম, দিওয়ান-ই-খাস, আগ্রায় মতি মসজিদ এবং
লাহোরে সারিমার উদ্যান নির্মাণ করেন। এজন্য তাকে Prince of Builders বলা হয়।
আওরঙ্গজেব(১৬৫৮-১৭০৭)
উত্তরাধিকার
সংক্রান্ত যুদ্ধ: শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজ মহলের গর্ভে চারপুত্রে ও দুইকন্যা জন্মগ্রহন করেছিলেন।
পুত্রদের নাম দারা, সুজা, আওরঙ্গজেব
ও মুরাদ কন্যাদের নাম ছিল জাহান আরা ও রওশন আরা। ভ্রাতৃযুদ্ধে জাহান আরা দারার পক্ষ এবং
রওশন আরা আওরঙ্গজেবের পক্ষ সমর্থন করে।সম্রাট শাজাহান তার
পুত্র আওরঙ্গজেবকে
যোগ্যতার স্বীকৃতিস্বরুপ আলমগীর নামক তরবারী
প্রদান করেন। সম্রাট আওরঙ্গজেব
অতিশয় ধর্মপ্রাণ মুসরমান ছিলেন। এজন্য তাকে জিন্দাপীর বলা হয় । তিনি জিজিয়া কর পুনঃস্থাপন
করেন।
মুহম্মদ শাহ:
দুর্বল
ও অকর্মণ্য মুঘল সম্রাট মুহম্মদ
শাহ এর আমলে (১৭৩৯খ্রিস্টাব্দে) পারস্যের নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন। নাদিরশাহ ভারত
হতে মহামূল্যবান কোহিনূর হীরা, ময়ূর সিংহাসন এবং প্রচুর ধনরত্ন পারস্যে নিয়েযান।
আহমদ
শাহ আবদালীর ভারত আক্রমণ: আহমদ শাহ আবদালি নাদির শাহের সেনাপতি ছিলেন। তিনি নাদিরশাহের
মৃত্যুর পর আফগানিস্তানের অধিপতি হন। তিনি মুহম্মদ শাতের রাজত্বকালে ভারত আক্রমন করেন
কিন্তু পরাজিত হন। এ পরাজয়ের শোধ নেওয়ার
জন্য তিনি আরওতিনবার
ভারত আক্রমণ করেন।
পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধঃ
প্রতিপক্ষঃ আহমদ
শাহ আবদালি এবং মারাঠা।
সময়কালঃ ১৭৬১
সাল।
স্থানঃ দিল্লীর
অদূরে পানিপথের প্রান্তর।
ফলাফলঃ আহমদ
শাহ আবদালি মারাঠাদিগকে পরাজিত করেন।
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ (১৮৩৭-১৮৫৭
সাল)
শেষ
মুঘল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ। সিপাহী বিদ্রোহের পর ১৮৫৮ সালে তাকে রেঙ্গুনে
(বর্তমান ইয়াঙ্গুনে) নির্বাসন দেওয়া হয়।১৮৬২
সালে তিনি রেঙ্গুনে নির্বাসিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। রেঙ্গুনেই তাকে সমাহিত করা হয়।
উপস্থাপনা ভালো তবে বানান ভুলের মাত্রা অত্যধিক।
ReplyDelete