বাংলায় নবাব শাসন -The Rule of Nawabs in bengal
নবাব মুর্শিদকুলী খন
(১৭১৭-১৭২৭)
সুবেদার মুর্শিদকুলী খানের সময় থেকে বাংলা সুবা প্রায় স্বাধীন হয়ে পড়ে । নবাব মুর্শিদকুলী থান বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব। নবাব মুর্শিদকুলী খান বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানাস্তর করেন।
নবাব আলঅবর্দী খান(১৭৪০-১৭৫৬)
আলীবর্দী খানের শাসনামলে
মারাঠারা প্রতিবছর বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা আক্রমণ করত। মারাঠাদের আক্রমণকে বাংলার ইতিহাসে বর্গীয় হাঙ্গামা বলা হয়। তিনি মারাঠাদের
সাথে চুক্তি করে বাংলাকে মারাঠাদের আক্রমণ হতে রক্ষা করেন।
নবাব সিরাজ-উ-দ্দৌলা (১৪৫৭-১৭৫৭)ঃ
আলীবর্দী খানের কোন
পুত্র সন্তান ছিলনা। ছোট মেয়ে আমেনার বিবাহ হয়
জযের উদ্দিনের সাথে। তাদের সন্তান সিরাজ-উ-দ্দৌলা তিনি তার উত্তরাধিকারী মনোনীত
করে যান। সিরাজউদ্দৌলার প্রকৃত নাম মীর্জা মুহম্মদ আলী । তিনি ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন
নবাব। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজ-উ-দ্দৌলা বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। এ সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর । সিরাজ সিংহান
লাভ করায় তার বড় খালা ঘষেটি বেগম এবং দরবারের প্রভাবশালীগণ নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
শুরু করেন। ইংরেজগণ এ ষড়ষন্ত্রে যোগ দেয়।
ইংরেজদের বিরুদ্ধে অভিযানঃ
১৭৫৬ সালে নবাবা সিরাজউদ্দৌলা কলকাতায় ইংরেজদের ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ অধিকার করেন। কলকাতা
অধিকার করে সিরাজউদ্দৌলা নিজ মাতামহের নামানুসারে এর নাম রাখেন আলীনগর ।
অন্ধকুপ হত্যা কাহিনীঃ
নবাবের কলকাতা অভিযান প্রাক্কালে হলেওয়েলসহ কতিপয় ইংরেজ কর্মচারী ফোর্ট উইলিয়ামে বন্দী
হয়েছিলেন। তার মধ্য ঐতিহাসিক হলওয়েলের বর্ণনা জতে জানা যায় যে, নাবাব ১৪৬ জন ইংরেজ
বন্দীর মধ্য ১২৩ জন শ্বাসরুদ্ধ হযে মৃত্যুবরণ করে। হলওয়েল কর্তৃক প্রচারিত এই কাহিনী
অন্ধকুপ হত্যা নামে পরিচিত। অন্ধকুপ কাহিনীর পশ্চাতে কোন ঐতিহাসিক সত্যতা খুজে পাওয়া
যায়না।
পলাশীর
যুদ্ধঃ ২৩ জুন, ১৭৫৭ পলাশীর প্রান্তরে নবাবের সাথে ইংরেজদের
যুদ্ধ হয়। মীরমদন, মোহনলাল প্রমুখ দেশপ্রেমিক সৈনিকগণ প্রাণপণ যুদ্ধ করলেও নবাবের সেনাপতি মীরজাফর, জগৎশেট, রায়দুর্লভ, ইয়ারলতিফ,
উমিচাঁদ এদের ন্যায় দেশদ্রোহীদের ষড়যন্ত্রে নবাব পরাজিত ও নিহত হন্ এ যুদ্ধে মাধ্যমে বাংলার
স্বাধীনতার সূর্য অস্তিমিত হয়। সিরাজ-উ-দ্দোলার হত্যাকারী মোহাম্মদী বেগ। (মতান্তরে
মরি জাফরের পুত্র মীরন)
মীর
কাসিম (১৭৬০-৬৪)
মীর কাসিম ছিলেন মীর
জাফরের জামাতা। তিনি ১৭৬০ সালে বাংলার সিংহাসনে আরোহন করেন। মীর কাসিম ছিলেন একজন সুযোগ্র
শাসক ও একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক । তাই প্রশাসনকে ইংরেজ প্রভাবমুক্ত করার জন্য বিচক্ষণ নবাব
সর্বাগ্রে রাজধানী মুশিৃদাবাদ থেকে মুঙ্গরে স্থানান্তরিত করেন।
বক্সারের যদ্ধ - Battle Buxer:
প্রতিপক্ষঃ ইংরেজ বাহিন
এবং বাংলা, অযোধ্যা ও দিল্লীর সম্রাটের মিত্রবাহিনী।
সময়কালঃ ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ।
স্থানঃ বক্সারের প্রন্তর।
ফলাফলঃ মীর কাশিমের
নেতৃত্বাধীন মিত্রবাহিনী ইংরেজদের কাছে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়। পলাশীর যুদ্ধান্তে শুধুমাত্র
বাংলাদেশে ইংরেদের প্রভুত্ব স্থাপিত হয়। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে মিত্র শক্তির পরাজয়ের
ফলে উপমহাদেশের সার্বভৌম শক্তি পদানত হয়।
No comments:
Post a Comment